চট্টগ্রাম ০৬:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুদানে বিদ্রোহীদের হামলায় ‘চারশর বেশি নিহত’, বলছে জাতিসংঘ

Listen to this article

জাতিসংঘ জানিয়েছে, সুদানের দারফুর অঞ্চলে আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সাম্প্রতিক হামলায় ৪০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে জাতিসংঘ এ তথ্য জানিয়েছে।

সুদানি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে দারফুরের শেষ বড় শহর আল-ফাশেরের নিয়ন্ত্রণ নিতে গত সপ্তাহে আরএসএফ আশপাশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে স্থল ও আকাশপথে ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে এই দুই পক্ষ ক্ষমতা নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হয়, যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানবিক সংকটের সূচনা করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা বৃহস্পতিবার থেকে শনিবারের মধ্যে অন্তত ১৪৮ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি বলেও আশঙ্কা তাদের।

জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বিবিসিকে বলেছেন, নিহতের সংখ্যা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া এখনও চলমান, এবং এর মধ্যে রোববারের সহিংসতায় নিহতরা নেই।

“বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের খবরে ৪০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে,” বলেছেন শামদাসানি। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯ জন মানবিক ত্রাণ সহায়তাকর্মী, জানিয়েছে জাতিসংঘ।

আল-ফাশেরকে ঘিরে থাকা দুটি শরণার্থী শিবির, জমজম ও আবু শুক ৭ লাখেরও বেশি মানুষকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। এ আশ্রিতদের অধিকাংশকেই দুর্ভিক্ষজনিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে আরএসএফ বলেছিল, বেসামরিকদের ওপর হামলার জন্য তারা দায়ী নয় এবং জমজমে হত্যাকাণ্ডের চিত্র মঞ্চস্থই হয়েছে তাদের গায়ে কালি লাগানোর জন্য।

পরেরদিন সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটি জানায়, তারা সুদানের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে শিবিরটি ‘সফলভাবে মুক্ত’ করতে পেরেছে।

সেনাবাহিনী এই শিবিরটিকে ‘সামরিক ব্যারাক বানিয়ে রেখেছিল’ এবং এর ‘নিষ্পাপ বেসামরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হতো’ বলে অভিযোগ আরএসএফের।

তারা আল-ফাশের শহরটি প্রায় এক বছর ধরে ঘিরে রেখেছিল। সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত মঙ্গলবার তৃতীয় বছরে গড়াল।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ফলকার টুর্ক সংঘাত নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিবদমান সব পক্ষকে নতুন করে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে আহ্বান জানিয়েছেন।

সুদানে সংঘাতের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে মঙ্গলবার লন্ডনে এক সম্মেলনের আগে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত, দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশটিতে ১২ কোটি পাউণ্ড মূল্যের খাদ্য ও ত্রাণ প্যাকেজ পাঠানোর ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, “সুদানের স্থিতিশীলতা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।”

লন্ডনে যে সম্মেলন হতে যাচ্ছে, তাতে আফ্রিকান ইউনিয়ন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যও সহ-আয়োজক।

সুদানে বিদ্রোহীদের হামলায় ‘চারশর বেশি নিহত’, বলছে জাতিসংঘ

আপডেট সময় ১১:২২:৩৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫
Listen to this article

জাতিসংঘ জানিয়েছে, সুদানের দারফুর অঞ্চলে আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) সাম্প্রতিক হামলায় ৪০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের’ বরাত দিয়ে জাতিসংঘ এ তথ্য জানিয়েছে।

সুদানি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে দারফুরের শেষ বড় শহর আল-ফাশেরের নিয়ন্ত্রণ নিতে গত সপ্তাহে আরএসএফ আশপাশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে স্থল ও আকাশপথে ব্যাপক হামলা চালানো শুরু করে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে এই দুই পক্ষ ক্ষমতা নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হয়, যা বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানবিক সংকটের সূচনা করেছে এবং লাখ লাখ মানুষকে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য করেছে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, তারা বৃহস্পতিবার থেকে শনিবারের মধ্যে অন্তত ১৪৮ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে। নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি বলেও আশঙ্কা তাদের।

জাতিসংঘের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বিবিসিকে বলেছেন, নিহতের সংখ্যা যাচাইয়ের প্রক্রিয়া এখনও চলমান, এবং এর মধ্যে রোববারের সহিংসতায় নিহতরা নেই।

“বিশ্বাসযোগ্য সূত্রের খবরে ৪০০-র বেশি মানুষ নিহত হয়েছে,” বলেছেন শামদাসানি। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৯ জন মানবিক ত্রাণ সহায়তাকর্মী, জানিয়েছে জাতিসংঘ।

আল-ফাশেরকে ঘিরে থাকা দুটি শরণার্থী শিবির, জমজম ও আবু শুক ৭ লাখেরও বেশি মানুষকে সাময়িক আশ্রয় দিয়েছে। এ আশ্রিতদের অধিকাংশকেই দুর্ভিক্ষজনিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হচ্ছে।

শনিবার দেওয়া এক বিবৃতিতে আরএসএফ বলেছিল, বেসামরিকদের ওপর হামলার জন্য তারা দায়ী নয় এবং জমজমে হত্যাকাণ্ডের চিত্র মঞ্চস্থই হয়েছে তাদের গায়ে কালি লাগানোর জন্য।

পরেরদিন সশস্ত্র এ গোষ্ঠীটি জানায়, তারা সুদানের সেনাবাহিনীর কাছ থেকে শিবিরটি ‘সফলভাবে মুক্ত’ করতে পেরেছে।

সেনাবাহিনী এই শিবিরটিকে ‘সামরিক ব্যারাক বানিয়ে রেখেছিল’ এবং এর ‘নিষ্পাপ বেসামরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করা হতো’ বলে অভিযোগ আরএসএফের।

তারা আল-ফাশের শহরটি প্রায় এক বছর ধরে ঘিরে রেখেছিল। সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে এই রক্তক্ষয়ী সংঘাত মঙ্গলবার তৃতীয় বছরে গড়াল।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ফলকার টুর্ক সংঘাত নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বিবদমান সব পক্ষকে নতুন করে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে আহ্বান জানিয়েছেন।

সুদানে সংঘাতের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে মঙ্গলবার লন্ডনে এক সম্মেলনের আগে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত, দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশটিতে ১২ কোটি পাউণ্ড মূল্যের খাদ্য ও ত্রাণ প্যাকেজ পাঠানোর ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, “সুদানের স্থিতিশীলতা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।”

লন্ডনে যে সম্মেলন হতে যাচ্ছে, তাতে আফ্রিকান ইউনিয়ন ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পাশাপাশি যুক্তরাজ্যও সহ-আয়োজক।