উড়োজাহাজের টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্যরোধে সরকারের ১০ দফা নির্দেশনা ‘যাদু-মন্ত্রের’ মত কাজ করেছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের রুটে টিকেটের দাম অর্ধেকে নামার তথ্য দিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ।
দেশের ট্রাভেল এজেন্টদের সংগঠনটির ভাষ্য, ঢাকা থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা, মদিনা বা দাম্মামের যে রুটগুলোতে একমুখী ভাড়া লাখ টাকা ছাড়িয়েছিল তা এখন ৪৮ থেকে ৫০ হাজারেই পাওয়া যাচ্ছে। এয়ারলাইন্সভেদে রিয়াদ বা দাম্মামের টিকেট পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ হাজার টাকাতেও।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আটাব বলেছে, সরকারি নির্দেশনার ফলে টিকেট ‘ব্লক’ করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়ানোর যে ধারা চলছিল তা বন্ধ হওয়ার ফলে এই পরিবর্তন এসেছে।
আকাশপথের যাত্রায় টিকেটের উচ্চমূল্য কমানো ও এ খাতে শৃঙ্খলা আনতে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় গত ১১ ফেব্রুয়ারি ১০ দফা নির্দেশনা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। এতে টিকেট বুকিংয়ের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তা বরাদ্দ করা না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বুকিং বাতিল করতে বলা হয়।
পাশাপাশি গ্রুপ বুকিংয়ের নামে কোনো এয়ারলাইন্সের অনেকগুলো টিকেট একসঙ্গে ব্লক করা হলে পরে সাত দিনের মধ্যে যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বরসহ তা বিক্রি নিশ্চিত করার তথ্য দিতে বলা হয়। তা না হলে পরের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেসব টিকেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করতে হবে এয়ারলাইন্সকে।
আটাব বলছে, সরকারি পরিপত্রে যাত্রীর নাম, পাসপোর্টের বিবরণ ও পাসপোর্টের ফটোকপি দিয়ে টিকেট বুকিংয়ের নির্দেশনার ফলে যেসব টিকেট নাম ছাড়া ‘ব্লক’ করে রাখা হত সেগুলো এয়ারলাইন্সগুলো ‘ওপেন’ করে দেয়। ফলে কম্পিউটার রিজার্ভেশন সিস্টেমে সিট সহজলভ্য হয়ে যায়। এতে এখন ট্রাভেল এজেন্সি ও যাত্রীরা ফ্লাইটে সিট খালি আছে কি না এবং কত ভাড়া তা অনলাইনে দেখতে পাচ্ছেন। সব দেখেশুনে চাহিদা মত টিকেট বুকিং করতে পারছেন যাত্রী এবং এজেন্সিগুলো।
এ পরিবর্তনের ফলে বাজারে টিকেটের যে কৃত্রিম সংকট ছিল সেটা অনেকাংশে কমে গেছে বলে মনে করছে সংগঠনটি। বলছে, ফ্লাইটের সিট সহজলভ্য হওয়ার কারণে এয়ারলাইন্সের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে এবং টিকেটের মূল্য কমে এসেছে।
আটাবের হিসাব অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা থেকে জেদ্দা, মদিনা, দাম্মাম রুটে টিকেটের মূল্য গ্রুপ নামেই প্রায় ১ লাখ টাকায় বিক্রি হত এবং কম্পিউটার সিস্টেমে এটা প্রায় ১ লাখ ৭০ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় ঠেকেছিল। সৌদি এয়ারলাইন্সে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত উচ্চমূল্যের রেকর্ড ছাড়িয়েছিল।
সরকারের জারি করা নির্দেশনার ফলে বর্তমানে এসব টিকেট কম্পিউটার রিজার্ভেশন সিস্টেমে ৪৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। কোনো কোনো এয়ারলাইন্স ঢাকা-দাম্মাম, ঢাকা-রিয়াদ এর টিকেট ৩৫ হাজার টাকাতেও বিক্রি করছে। এমন নির্দেশনার জন্য বিমান মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়েছে আটাব।