প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে তিনটি বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। পদ্ধতিগুলো হলো- সময়ের মধ্যে সম্পাদনযোগ্য একটি পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি, অনলাইন পদ্ধতি এবং প্রক্সি ভোটিং। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
সব প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হলে প্রক্সি ভোট পদ্ধতিটি মোটামুটি পরিসরে আর বাকি দুটি পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে পারবে বলে আশা করছে ইসি।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন এবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট নিশ্চিত করতে চান। এর আলোকে নির্বাচন কমিশন নিজেদের সংশ্লিষ্ট কমিটিকে প্রস্তাব দেওয়ার দায়িত্ব দেয়। তিনি বলেন, ডাক বিভাগ, বিভিন্ন দেশি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করা হয় ও সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবও বিশ্লেষণ করে প্রস্তাব তৈরি করা হয়।
বিদ্যমান পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি অচল। এ ক্ষেত্রে কমিটি তিনটি পদ্ধতি সুপারিশ করেছে জানিয়ে আবুল ফজল বলেন, একটি হচ্ছে সময়ের মধ্যে সম্পাদনযোগ্য পোস্টাল ব্যালট সিস্টেম, আরেকটি হলো অনলাইন ভোটিং। তবে অনলাইন ভোটিং তেমন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।
আবুল ফজল বলেন, আমরা চারটা দেশে দেখেছি। যেমন যুক্তরাষ্ট্র, ফিলিপাইন, এস্তোনিয়া এবং মেক্সিকো। পাশাপাশি আমাদের উপমহাদেশে ভারত, পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশে পাইলটিং হিসেবে অনলাইন সিস্টেমে করছে। তবে ইউএনডিপির সঙ্গেও আমরা আলোচনা করেছি। তারা বলেছে, এটা অনেকেই সফল হতে পারেনি। ফলে পূর্বের নিয়মে তারা ফিরে গেছে।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, আরেকটি প্রস্তাব হলো প্রক্সি ভোট। অর্থাৎ একজন প্রবাসী বাংলাদেশির হয়ে কেউ একজন তার এলাকায় ভোটটা দিয়ে দেওয়া। আমাদের কমিটির কাছে বিষয় ছিল ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া, ভোটের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা, প্রেপার ট্রেইল, সাশ্রয়ী ও সর্বজনীন পদ্ধতি হতে হবে; যাতে করে সব ধরনের প্রবাসী ভোটটা দিতে পারে। সব বিবেচনায় নিয়ে কমিটি পোস্টাল ও অনলাইন পদ্ধতি ডেভেলপ করে ট্রায়ালের জন্য সাজেস্ট করেছে, যাতে করে টেস্ট করে দেখা যায় কোনটি বাস্তবায়নযোগ্য। পাশাপাশি তারা এটাও সাজেস্ট করেছে যদি আগামী নির্বাচনে সত্যিকার অর্থেই প্রত্যাশা পূরণ করতে চাই তবে প্রক্সি ভোটিংয়ে যেতে হবে।
আবুল ফজল বলেন, বর্তমানে কয়েকটি দেশে বিভিন্ন পরিসরে প্রক্সি ভোটিং প্রচলিত আছে। তার মধ্যে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া অন্যতম। আর ভারতে শুধুমাত্র সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রচলিত আছে।
আগামী ৭-৮ এপ্রিলের মধ্যে একটা কর্মশালা হবে বলে জানান আবুল ফজল। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও ইনস্টিটিউটকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ইসি প্রথমে এই তিন পদ্ধতির তিনটা ‘সিস্টেম আর্কিটেকচার’ করতে চায়। এরপর রাজনৈতিক দল ও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। যদি কোনোটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় সেটার ডেভেলপমেন্ট করা হবে। এ ছাড়া আইনেও পরিবর্তন আনতে হবে।
আবুল ফজল বলেন, এখানে সবার সম্মতির ব্যাপার রয়েছে। সিস্টেম ডেভেলপের বিষয় রয়েছে। যদি এগুলো করতে পারি তাহলে ইনশা আল্লাহ আগামী নির্বাচনে প্রক্সি ভোটটা মোটামুটি একটা পরিসরে, আর বাকিগুলো ট্রায়াল ফেইজে ইমপ্লিমেন্ট করতে পারব বলে আমাদের ধারণা।